দক্ষ কর্মী নেবে কানাডা, আবেদন করার এখনই সময়
কম্পিউটার বা ইনফরমেশন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার/অ্যানালিস্ট,
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার)
২০১৮ সালকে কানাডায় দক্ষ কর্মীদের ইমিগ্রেশনের সেরা বছর বলে মন্তব্য করেছেন দেশটির ইমিগ্রেশন বিষয়ক মন্ত্রী আহমেদ হোসাইন। তিনি বলেন, আগামী বছর তিন লাখের বেশি মানুষ বৈধভাবে কানাডায় বসবাসের সুযোগ পাবে।
আর এই সুযোগ নিতে সঠিক নিয়মে আবেদন করতে হবে এক্সপ্রেস এন্ট্রি প্রোগ্রামে।
এখানে একটা বিষয় মনে রাখা যেতে পারে যে সবশেষ গত দুই বছরে কানাডা সরকারের লক্ষ্য ছিল ইকোনমিক ক্লাস, ফ্যামিলি ক্লাস এবং হিউমেনেটিরিয়ান ক্লাস শ্রেণি থেকে মানুষকে ইমিগ্রেশন দেওয়া।
গত ১৮ অক্টোবর সর্বশেষ ড্র তে ২৭৫৭ জন সিআরএস ৪৩৬ পয়েন্ট পেয়েই আইটিএ পেয়ে গেছেন। সিআরএস পয়েন্টের এই হার দেখে বোঝা যায়, আগামীতে আরো সুযোগ আসবে দক্ষ লোকবলের জন্য।
এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে আপনি একজন দক্ষ ইমিগ্রেশন আইনজীবীর সহায়তা নিতে পারেন। তাহলে বুঝতে পারবেন যে আপনার যোগ্যতা আছে কি না?
সঠিক পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করার মাধ্যমে আপনি বা আপনারা পেতে পারেন স্বপ্নের কানাডার স্থায়ী নাগরিকত্ব। মনে রাখতে হবে কানাডা সরকার ‘প্রথম যে আসবে তাকে আগে সার্ভিস দেওয়া হবে’ এই নীতিতে কাজ করে।
বিল সি-৬ অনুযায়ী নাগরিকত্বের জন্য আবেদন করার যোগ্য হতে স্থায়ী বাসিন্দা হিসেবে কানাডায় পাঁচ বছরের মধ্যে তিন বছর বসবাস করতে হবে, যেটি এর আগে ছিলো ছয় বছরের মধ্যে চার বছর। এছাড়া কানাডায় যারা অস্থায়ী স্ট্যাটাসে ছিল, যেমন- ওয়ার্ক এবং স্টাডি পারমিট, তাঁরাও তাদের কানাডায় বসবাসের সময়টুকু তিন বছরের মেয়াদের একটি অংশ হিসেবে গণনা করতে পারবেন।
সংশোধিত নিয়মে পিএনপি, এক্সপ্রেস এন্ট্রি, এফএসডাব্লিওপি, এফএসটিপি, কিউএসডাব্লিউপি, এআইএনপি, এসআইএনপি, এমপিএনপি, এনএসএনপি, বিসিএনপি,ওআইএনপি, কেয়ারগিভার, ফ্যামিলি স্পন্সরশিপসহ নতুন নতুন বিভিন্ন প্রোগ্রামে সহজ নিয়মে পেশাজীবীদের ইমিগ্রেশন পাওয়ার সুযোগ রয়েছে।
কানাডা সরকার পরিচালিত বিভিন্ন প্রোগ্রামের মধ্যে আবেদনকারীরা যার যার যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন। এগুলো হলো :
১। এক্সপ্রেস এন্ট্রি
আমেরিকার সরকার এইচ ওয়ান বি ভিসা নিয়ে কড়াকড়ি আরোপ করার পর, বিপুল সংখ্যক দক্ষ ও যোগ্য পেশাজীবিদের ওয়েলফেয়ার দেশগুলোতে মাইগ্রেশনের শেষ ভরসাস্থল এখন কানাডার এক্সপ্রেস এন্ট্রি। প্রোগ্রামটি মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত, তা হলো:- ১। ফেডারেল স্কিল ওয়ার্কার ২। ফেডারেল স্কিল ট্রেডার ৩। কানাডিয়ান এক্সপেরিয়ান্স ক্লাস। এখানে পেশার কোনো ধরাবাঁধা তালিকা নেই, নেই কোনো কোটা সিস্টেম। কমপক্ষে ৬.৫ আইইএলটিএস স্কোর থাকলেই এই প্রোগ্রামে আবেদন করা যায়।
২। প্রভিন্সশনাল নমিনি প্রোগ্র্যাম (পিএনপি)
কানাডার মোট ১১ টা প্রোভিন্স ইমিগ্রেশন করার জন্য আবেদনকারীদের নমিনেশন দিতে পারে। একেক প্রভিন্স একেক সময়ে তাদের প্রোগ্রাম উন্মুক্ত করে দেয়।সাধারণত প্রভিন্সশনাল প্রোগ্রাম এর শর্ত আলাদা হয়। যোগ্য আবেদনকারীরা তাঁদের যোগ্যতা অনুযায়ী আবেদন করতে পারবেন। তবে এই ক্ষেত্রে লক্ষ রাখতে হয় প্রোগ্রামের সময়কাল সম্পর্কে। কারণ কখনো কিছু শর্ত শীথিল করা হয় আবার কিছু কিছু নতুন শর্তও আরোপ করতে দেখা যায়।
ক। ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রভিন্সশনাল প্রোগ্রাম :
আইইএলটিএস এ ৫.৫ সহ দুই বছরের কাজের অভিজ্ঞতা সম্পন্ন ব্যক্তিরা শুধু গ্র্যাজুয়েশন ডিগ্রি থাকলেই কানাডার অন্যতম সুন্দর এই প্রদেশে আবেদন করতে পারেন ব্রিটিশ কলম্বিয়া প্রভিন্সশনাল প্রোগ্রামে। এই প্রোগ্রাম চারটি ক্যাটাগরিতে বিভক্ত। এগুলো হলো, এক্সপ্রেস এন্ট্রি বিসি-স্কিল ওয়ার্কার ও ইন্টারন্যাশনাল গ্র্যাজুয়েট, স্কিল ইমিগ্রেশন : স্কিল ওয়ার্কার এবং এন্ট্রি লেভেল সেমি স্কিল।
সর্বশেষ ড্রতে ৩৭৭ জন নমিনেশন পেয়েছে শুধু এই প্রোভিন্স থেকে।
খ. সাসকাচুয়ান ইমিগ্র্যান্ট নমিনি প্রোগ্রাম :
কানাডার অন্যতম সেরা এবং উন্নত প্রদেশ সাসকাচুয়ান এ বর্তমানে সুযোগ আছে কিছু বিশেষ পেশাজীবীদের জন্য খুব সহজ শর্ত পূরণ করে আবেদন করার এবং দ্রুততম সময়ে সপরিবারে ইমিগ্রেশন ভিসা পাওয়ার।
আপনি যদি নিচের কোনো একটি পেশার অন্তর্ভুক্ত হয়ে থাকেন, তাহলে দেরি না করে দ্রুত ফাইল প্রসেস শুরু করতে পারেন।
- কম্পিউটার বা ইনফরমেশন সিস্টেম ইঞ্জিনিয়ার/অ্যানালিস্ট,
- সিভিল ইঞ্জিনিয়ার
- মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার
- এনজিও কর্মকর্তা/সোশাল ওয়ার্কার/প্রজেক্ট ম্যানেজার
- কৃষি ব্যবস্থাপক/কৃষি কর্মকর্তা,
- সাপ্লাই চেন/পারচেজ ম্যানেজার
গ. অন্টেরিও ইমিগ্র্যান্ট নমিনি প্রোগ্রাম :
কানাডায় যারা লেখাপড়া করেছে, যাদের কানাডায় চাকরি করার যোগ্যতা রয়েছে, যাদের কানাডা থেকে চাকরির অফার রয়েছে অথবা যারা ব্যবসা করতে ইচ্ছুক তাঁরাই এই নির্দিষ্ট প্রভিন্সে আবেদন করে স্থায়ী হতে পারেন।
আবেদন করার ডেডলাইন : প্রোফাইল তৈরি করার পর মাত্র ১৪ দিন সময় থাকে যেকোনো স্কিমে আবেদন শেষ করার।
ঘ. নভো স্কশিয়া নমিনি প্রোগ্রাম :
২০১৫ সালের পর বহু কাঙ্ক্ষিত এই প্রোগ্রামটি আগামী সপ্তাহের যেকোনো দিন চালু হতে পারে। ফিন্যানশিয়াল একাউন্টস, অ্যাডমিন অফিসার, সিভিল ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার দক্ষ ব্যাক্তি, নার্স, এনজিও কর্মীরা সহজেই এই প্রোগ্রামে আবেদন করতে পারবেন।
ঙ. আটলান্টিক ইমিগ্রেশন পাইলট প্রোগ্রাম :
মার্চ ২০১৭ থেকে তিনটি ক্যাটাগরিতে আটলান্টিক ইমিগ্রেশন পাইলট প্রোগ্রাম চালু হয়েছে। এর আওতায় দীর্ঘদিন কানাডায় কাজ করার সুযোগ পাওয়া যায়। যেহেতু প্রোগ্রামটিতে জব অফার থাকে তাই অনেকের পছন্দ এই প্রোগ্রামটি। পরিবারসহ দুই হাজার পরিবার ২০১৭ সালে এই সুযোগটি পাবে বলে নিশ্চিত করেছে আটলান্টিক সরকার।
চ. কুইবেক ইমিগ্রেশন :
কুইবেক কানাডার একটি প্রোভিন্স হলেও এর ইমিগ্রেশন প্রক্রিয়া আলাদা ও স্বতন্ত্র। শুধুমাত্র ২০১৮ সালে সরকারের পরিকল্পনা ৫১ হাজার নতুন ইমিগ্র্যান্ট নেওয়া। বছরের যেকোনো সময় নির্দিষ্ট কোটা উল্লেখ করে তাদের প্রোগ্রাম ঘোষণা দেওয়া হয়। সাধারণত এই প্রোভিন্সের শর্ত বা যোগ্যতা তুলনামূলক অনেক সহজ ও শীথিল থাকে।
কুইবেক এর প্রোগ্রামগুলো মূলত তিনটি ক্যাটাগরিতে হয়ে থাকে। এগুলো হলো : ১. কুইবেক স্কিল ওয়ার্কার প্রোগ্রাম ২. এন্টারপ্রেনার প্রোগ্রাম এবং ৩. কুইবেক এক্সপেরিন্স ক্লাস।
প্রতিটি প্রোগ্রামের নিজস্ব শর্ত আছে। প্রয়োজন ও যোগ্যতা অনুযায়ী ভালো কোনো আইনজীবীর পরামর্শ নিয়ে যে কেউ আবেদন করতে পারেন।
ছ. আলবার্টা ইমিগ্র্যান্ট নমিনি প্রোগ্রাম :
• গ্র্যাজুয়েশন/ডিপ্লোমা
• বছরের সংশ্লিষ্ট কাজের অভিজ্ঞতা
• আইইএলটিএস ৫।
যাদের কমপক্ষে এই যোগ্যতা রয়েছে যেমন কম্পিউটার নেটওয়ার্ক টেকনিশিয়ান, সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার, কম্পিউটার প্রোগ্রামার, নার্স, রেস্টুরেন্ট ম্যানেজার, সেলসম্যান, হেলথ কেয়ার ম্যানেজার, একাউনটেন্ট পেশার লোকজন এখন তৈরি হন আবেদন করার জন্য। জানুয়ারী ২০১৮ সালে সবার জন্য উন্মুক্ত হচ্ছে প্রোগ্রামটি।
জ. ফেডারেল স্কিল্ড ট্রেড প্রোগ্রাম :
রাজমিস্ত্রী, ইলেকট্রিশিয়ান, ওয়েল্ডারদের মতো কিছু পেশাজীবীরা সরাসরি এই প্রোগ্রামের আওতায় আবেদন করে জবসহ ইমিগ্রেশন করতে পারেন। তবে তাদের আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত প্রতিষ্ঠান থেকে ট্রেড স্কিল সার্টিফিকেট থাকতে হবে এবং সংশ্লিষ্ট কাজে অভিজ্ঞতাও থাকতে হবে।
কন্সট্রাকশন, চিফ কুক, বেকার, ফিস প্রোসেসিং, ইলেকট্রিকাল, ইন্ডাসট্রিয়াল, যন্ত্রপাতি পরিচালনা ও রক্ষনাবেক্ষন, প্রাকৃতিক সম্পদ পরিচালনা, কৃষিকাজ ইত্যাদি কাজেরও প্রচুর চাহিদা রয়েছে কানাডায়। যোগ্য পরিবারের সদস্যরাও এই প্রোগ্রামের আওতায় কানাডায় যেতে পারেবে। ১৮ থেকে ৪৫ বছরের যে কেউ আবেদন করতে পারবেন। এই প্রোগ্রামের প্রক্রিয়া অতি সহজ ও দ্রুতসময়ে সম্পন্ন হয়।
ফ্যামিলি ইমিগ্রেশন :
ফ্যামিলি স্কলারশিপের আওতায় কানাডায় ইমিগ্রেশন হওয়া সবচেয়ে সহজ ও দ্রুত হয়। তবে যাদের নিকট আত্মীয় নেই তারা এই সুযোগ পাবে না।
কেয়ারগিভার প্রোগ্রাম :
এই প্রোগ্রামের মাধ্যমে সর্বোচ্চ ছয় মাসের মধ্যে পরিবারসহ কানাডায় স্থায়ী হোন । শুধু Certified নার্সরা আবেদন করতে পারবে। অন্যসব প্রচলিত প্রোগ্রামের মতো ৬৭ পয়েন্ট বা সিআরএস ১২০০ পয়েন্টের প্রয়োজন নেই। নার্সিং যাদের ডিপ্লোমা বা বিএসসি (নার্স) ডিগ্রি এবং ন্যূনতম আইইএলটিএস ৫ স্কোর আছে, তারাই সরাসরি আবেদন করে চাকরিসহ কানাডায় যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছেন কেয়ারগিভার প্রোগ্রামে। শিশু বা বয়স্কদের যত্ন ও লক্ষ রাখাই এই পেশার মানুষদের কাজ হবে।
এ ছাড়া আইটি প্রফেশনাল, প্রকৌশলী, ম্যানেজার, মানবসম্পদ বিভাগ, প্রশাসন, ফিন্যান্স, অ্যাকাউন্টিং, সেলস অ্যান্ড মার্কেটিং, ইনফরমেশন সিস্টেম অ্যানালাইসিস অ্যান্ড কনসালটেন্ট, মিডিয়া ডেভেলপার, মেডিকেল রিপ্রেজেনটেটিভ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, রিটেইল সেলস সুপারভাইজার, গ্রাফিক ডিজাইনার অ্যান্ড ইলাসট্রাটর, চিকিৎসক, নার্স, ফার্মাসিস্ট, ব্যাংকারসহ বেশকিছু পেশাজীবীর আবেদন করার সুযোগ রয়েছে।
এ বিষয়ে দীর্ঘদিন কাজ করার অভিজ্ঞতা রয়েছে লেখক, কলামিস্ট ও মিডিয়া ব্যক্তিত্ব, আন্তর্জাতিক অভিবাসন আইন বিশেষজ্ঞ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী আলহাজ্ব শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু। এই বিষয়ে তাঁর মতামত জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুধুমাত্র প্রকৃত পক্ষেই যারা যোগ্যতা রাখে তাদের আর দেরি করা ঠিক হবে না। ২০১৮ সালে যেহেতু দক্ষ লোকজনের কোটা অনেক বেশী, সুতরাং আবেদন করতে ইচ্ছুক লোকজনদের সবকিছু জেনে প্রস্তুতি নেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়।
শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজু আরো বলেন, অযোগ্য ব্যক্তিরা অযথাই আবেদন করে দেশের ভাবমুর্তি নষ্ট করবেন না। আগ্রহী ব্যক্তিরা এ বিষয়ে সরাসরি আন্তর্জাতিক অভিবাসন বিষয়ক আইন বিশেষজ্ঞ ও বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী এবং ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের চেয়ারম্যান এবং আলহাজ্ব শেখ সালাহউদ্দিন আহমেদ রাজুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন।
আপনার পূর্ণাঙ্গ জীবনবৃত্তান্ত পাঠাতে পারেন এই ই-মেইল info@worldwidemigration.org ঠিকানায় । এ ছাড়া ভিজিট করুন www.wwbmc.com. ওয়েবসাইটে। ঢাকার উত্তরায় ৭ নম্বর সেক্টরের ৫১ সোনারগাঁও জনপথে অবস্থিত খান টাওয়ারে ওয়ার্ল্ডওয়াইড মাইগ্রেশন কনসালট্যান্টস লিমিটেডের অফিসেও খোঁজ নিতে পারেন। ফোনে প্রাথমিক তথ্যর জন্য কথা বলতে পারেন ০১৯৬৬০৪১৫৫৫, ০১৯০৪০৩৬৮৯৯, ০১৯০৪০৩৬৮৯৮, ০১৯৩৮৪৩৩৪০, ০১৯৬৬০৪১৮৮৮ নম্বরে। হাল নাগাদ তথ্য পেতে ভিজিট করতে পারেন www.facebook.com/WorldwideMigrationConsultantsLtd ফেসবুক পাতায়।
collected
No comments